সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের পাঁচুড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।আহতরা হলেন-পাঁচুড়িয়া গ্রামের হালিম উদ্দিনের ছেলে আলমাস হোসেন ও আবুল কালামের ছেলে এবং ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল জমিদার। এদের মধ্যে আলমাস হোসেনকে গুরুতর আহতবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগে পাঁচুড়িয়া মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ এনে স্কুলের পক্ষ থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার পাবনা আদালতে ওই মামলার সাক্ষ্যর দিন ছিল। কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অভিভাবকদের সাক্ষ্যর ব্যাপারে কিছু না বলে কৌশলে তিনটি বাসযোগে পাবনায় একটি পার্কে পিকনিকে যাওয়ার কথা বলে আদালতে নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন অভিভাকরা।
বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকরা ফুঁসে ওঠেন। পরে সন্ধ্যার আগে শিক্ষার্থীদের বাস ফিরে এলে কেন অভিভাবকদের না জানিয়ে তাদের সন্তানদের আদালতে সাক্ষ্য দিতে নিয়ে যাওয়া হলো এমন প্রশ্ন করলে ম্যানেজিং কমিটির লোকজন ও অভিভাবকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে সেটি সংঘর্ষে রুপ নেয়।
বেশ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের না জানিয়ে কেন পিকনিকের কথা বলে আদালতে সাক্ষ্য দিতে নিয়ে যাওয়া হলো? সন্তানদের স্কুলে পাঠাই পড়ালেখা শেখানোর জন্য। যাদের সাক্ষ্য ছিল তাদের নিয়ে গেলেই তো পারতো। কিন্তু সবাইকে নিয়ে যাবে কেন? এর সুষ্ঠু বিচার চান তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালতে ১৫ জন শিক্ষার্থীর সাক্ষ্য ছিল। কিন্তু বাচ্চারা (শিক্ষার্থীরা) নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে সবাই মিলে গিয়েছিল। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারের মৌখিক অনুমতিক্রমে পাবনায় একটি পার্কে সবাই পিকনিকে যাই। শিক্ষার্থীদের সবাইকে এভাবে নিয়ে যেতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এতো কিছু ভেবে তো যাইনি। উল্টো তিনি এই ঘটনার জন্য মামলার বিবাদী ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।
জানতে চাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন আদালতে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাক্ষ্য আছে। সেইসঙ্গে পিকনিকের কথাও বলেছিলেন। তবে সবাইকে নিয়ে কেন আদালতে যাবে? এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, খবর পেয়ে অফিসার ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।