বিশেষ প্রতিনিধি:
পালিয়ে থেকেও বেতন-ভাতা তুলছেন পাবনার সরকারি ডা. জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ। অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর না করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পরেও থেমে নাই তার বেতন-ভাতা উত্তোলন।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই সরকারি ডাঃ জহুরুল কামাল ডিগ্রি আব্দুল লতিফ দীর্ঘ দেড় মাস কলেজে আসেন না। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রম, আর্থিক ক্ষমতা, আইনশৃঙ্খলা পরীক্ষা:অভ্যন্তরীন ইনকোর্স পরীক্ষা, পাবলিক পরীক্ষা, ফরম পূরণ,রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত্র এবং ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যয়ন ও সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারছেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষকরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ও পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন ।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট তারিখ হতে অত্র কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বিনা ছুটিতে অদ্যবধি কলেজে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং কোন শিক্ষকের উপর দায়িত্বভার অর্পণ করেন নাই কিন্তু বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ঠিকই ভোগ করছেন। জানা যায়, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি ১৯৯৫ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ৩৫০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত এবং ৭০ জন শিক্ষকসহ সর্বমোট ৭৮ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন।
কলেজের প্রদর্শক আব্দুর রহিম বলেন, বিগত আওয়ামীলীগের শাসনামলে প্রভাব খাটিয়ে অধ্যক্ষ পদটি বাগিয়ে নেন আব্দুল লতিফ। তার থেকেই থেমে নেই তার অপকর্ম ও দুর্নীতি। কলেজের আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচারণ করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ থাকায় গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং বিনা ছুটিতে কলেজে না এসেই নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। ৫ আগস্ট থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর এখন পর্যন্ত তিনি কলেজে অনুপস্থিত।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ স্যার না থাকায় ফরম পূরণ, রেজিষ্ট্রেশন, প্রত্যয়ন ও সার্টিফিকেট না পাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্য হচ্ছে আমাদের।
অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে জানান, শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসা ছুটি পাওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর করেছি আমি ।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম জানান, কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তদন্ত কাজ শেষ করেছি। তদন্তপ্রতিবেদন খুব দ্রুতই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হবে।
Leave a Reply