নিজস্ব প্রতিবেদক
বিলীন হচ্ছে ফসলে জমি অস্ত্র দেখিয়ে চলছে বালু উত্তোলন, নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি । আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারায় পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলনের মহাকর্মযজ্ঞ চলছে।
পাবনা ও কুষ্টিয়ার প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জনগণ।
নদীর তীর ঘেষে বালুর উত্তোলনের ফলে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে কৃষকদের শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
২৬ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের চর কণ্ঠগজরা এলাকায় সরে জমিনে দেখা যায় বালু উত্তোলনের দৃশ্য দেখলে মনে হবে এটি কোনো নৌবন্দর।
সেখানে প্রকাশ্যে ২০ থেকে ৩০টি ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
শতাধিক ট্রলার ট্রলি ট্রাকের মাধ্যমে এসব বালু চলে যাচ্ছে পাবনার ভাড়ারা, দোগাছী, পাকশী, সুজানগর, ভাঙ্গুরা, চাটমোহর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়ার পাংশা, কুমারখালী ও রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন অন্তত কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা হয় এখানে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী বলেন, ‘নৌকা থেকে অস্ত্র দেখিয়ে তারা বালু উত্তোলন করে।
বছরের পর বছর ধরে এই কাজ চলে আসছে।
এভাবেই ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। আমরা মনে করেছিলাম বিগত সরকার পতনের পর বালু উত্তোলন বন্ধ হবে।
কিন্তু অতি দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে এখনো প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ দেখি না।
আর আমরা প্রতিবাদ করলেই আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আপনারা নিজ চোখেই দেখুন কীভাবে শত শত ফসলি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই।’
বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জের সহযোগী আব্দুল আলিম এবং পাবনার ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খানসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রিত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে এই বালু উত্তোলনের মহাকর্মযজ্ঞ চলে। এছাড়া বালু উত্তোলনকারীরা নৌ-পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলগুলোকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন চলে। গত বুধবার বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করায় তিন কৃষককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে আর কেউ কথা বলতে সাহস করছেন না।
তবে পাবনার ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান বলেন, ‘আমার জানামতে গত এক মাস ধরে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কিন্তু এসবের সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার জড়িত থাকার বিষয়টি মিথ্যা।’
Leave a Reply