সংবাদদাতা:পাবনায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হত্যাচেষ্টা মামলা করে বাড়ি ফেরার পথে বাদীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এলাকার চিন্হিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধা ৬ টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের কোলাদী গ্রামে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করায় এমন ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তি হলেন- কোলাদী গ্রামের নিচ পাড়া মহল্লার মৃত ইয়ার আলী প্রামানিকের ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন প্রামাণিক( ৪২)। তিনি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
অভিযুক্তরা হলো:- কোলাদী গ্রামের মসজিদ পাড়ার নিচপাড়া গ্রামের আব্বাস আলী খান মন্টুুর ছেলে মুকুল হোসেন খান, আঃ মতিন খান, আঃ মমিন খান, মহসিন আলম খান, মুকুল খানের ছেলে মহিদ হোসেন খান। মুকুল খানের নামে থানায় ৪ টি মামলা রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৪ টার দিকে এলাকার চিন্হিত সন্ত্রাসীদের হামলায় নিজ বাড়িতে পরিবারসহ আহত হয় ওই গ্রামের আলাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন। এ ঘটনায় আহত ও লাঞ্চিত করা হয় আলাউদ্দিনের মাতা জমেলা খাতুন, স্ত্রী শাপলা খাতুন ও মেয়ে প্রিতি খাতুন। এসময় মেয়ে প্রীতি খাতুনের গলার ৮ আনা ওজনের সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।এসময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে মামলার প্রধান আসামী ও এলাকার চিন্হিত সন্ত্রাসী মুকুল খানসহ তার পেটুয়া বাহিনী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখালে আহতরা হাসপাতালের আউটডোরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। আহতদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সোমবার (২১ অক্টোবর) আবার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) আলাউদ্দিন প্রামাণিক বাদী হয়ে পাবনার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সন্ত্রাসী মুকুল হোসেন খান, আঃ মতিন খান, আঃ মমিন খান, মহসিন আলম খান, মহিদ হোসেন খানকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
সন্ত্রাসীরা ইতিপূর্বে আলাউদ্দিনের কৃষি জমিতে রোপনকৃত ৮০০ টি কলাগাছ কেটে ফেলে এবং বাড়িতে প্রবেশের পথ বাঁশ দিয়ে আটকে গৃহবন্দী করে রাখে। গত বুধবার মামলা করে শহর থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে খোকন খানের বাড়ির সামনে পৌছালে নামীয় আসামীরা হাতে থাকা হাতুরী, জিআই পাইপ, লোহার রড, হাসুয়া, চাইনিচ কুড়াল, টাঙ্গি নিয়ে দলবদ্ধভাবে আলাউদ্দিনের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এলোপাথারী কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। তার চিৎকারের স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের গভীর ক্ষত ও ডান হাত ভেঙে গেছে।
আহত আলাউদ্দিন প্রামাণিক অভিযোগ করে বলেন, এসব সন্ত্রাসীরা আমার কলাবাগান কেটে সাবাড় করে দিছে। আমার বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এসবের প্রতিবাদ করায় আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক মারপিট করা হয়। এরপর আমি মামলা করে বাড়িতে আসার পর মামলার আসামিরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম ও আহত করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে না দেওয়াতে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত মুকুল খানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব অপরাধীদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
Leave a Reply