খালেদ আহম্মেদ, বিশেষ প্রতিনিধি
পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমকে দীর্ঘ ১৩ বছর কর্মরত থাকা অবস্থায় ছাত্রীদের যৌনহয়রানি ও অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সাময়ীক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম বলেছেন তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরাতে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর যোগসাজসে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়ে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এসব অভিযোগের সঠিক তদন্ত করা হলে আসল সত্য বেড়িয়ে আসবে বলে দাবী করেন রবিউল করিম। তিনি সংবাদ সম্মেলন করে সঠিক তদন্ত পূর্বক ন্যায় বিচার দাবী করেন। তিনি বলেন, ২০১১ সালে এই বিদ্যালয়ে যোগদান করে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সন্তানের স্নেহ দিয়ে শিক্ষাদান করি। বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রীরা কোনো দিন আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার অভিযোগ করেনি। স্কুলের সরকারি বরাদ্দের কোন টাকা আত্মসাৎ করিনি। ব্যংকের টাকা স্কুল কমিটির সভাপতি ও আমার যৌথ স্বাক্ষরে উত্তোলন করা হয়।
অডিট রিপোর্টগুলো দেখলে সত্যটা জানা যাবে। স্কুলে অনুপস্থিত থাকারও কোন প্রমান দেখাতে পারবেনা অভিযোগকারীরা। আমি কোনো নেশা করিনা। পান খাই অথচ আমার অফিস আলমারীতে যৌন উত্তেজক সামগ্রী ও মদের বোতল পাওয়ার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, এটাও তাদের সাজানো নাটক। আমার অফিস কক্ষে ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়িয়েছি এটাও অসত্য। শিক্ষকদের কক্ষে অন্যান্য শিক্ষকের উপস্থিতিতে এবছর দুইটি ক্লাস নিয়েছি। সেখানে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার মত কনো সুযোগ নেই।
মদের বোতল আর যৌন উত্তেজক সামগ্রী আমার অফিস আলমারীতে কেমনে আসলো সঠিক তদন্ত করলে সত্যটা বেড়িয়ে আসবে। আলমারীর চাবি সহকারী প্রধান শিক্ষকের নিকট বর্তমান সভাপতির (এডিএম) সামনে হস্তান্তর করেছি। আমার বিরুদ্ধে যেসকল ছাত্রী ও অভিভাবকদের দিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে, ওই সকল অভিযোগকারী ছাত্রীদের স্বাক্ষর কিনা তাও যাচাই করার দাবী করেন তিনি।
এদিকে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমের দেওয়া বক্তব্যের প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য যাওয়া হয় ওই স্কুলে।
শুরু হয় সাংবাদিকদের অনুসন্ধান
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুদ্দিন ঘটনা সম্পর্কে জানান, স্কুলের ছাত্রী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমকে সাময়ীক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন যৌন উত্তেজক সামগ্রী আলমারীতে পাওয়া গেছে। এক পর্যায়ে বলেন মদের বোতলটা ছাত্রীরা স্কুলের ছাদে পেয়েছে। কে পেয়েছে তার কোন সঠিক উত্তর তিনি দিতে পারেন নাই। ছাদে পাওয়া গেলে তা যে প্রধান শিক্ষকের তারও কোন প্রমাণ দিতে পারেননাই। আমিনুদ্দিন বারবার বলেছেন প্রধান শিক্ষক ১ টা আলমারির চাবি দিয়েছেন। কিন্তু আরেকটা আলমারির চাবি আলমারির মধ্যেই ছিলো সেটা বলছেননা। সাংবাদিকেরা বলেন যে, আরেকটা চাবিতো আলমারির মধ্যেই ছিলো। তখন বলেন হ্যাঁ।
কিছুদিন আগে পান করা মদের বোতলে মদের কেন গন্ধ নাই। বোতলটি দেখলে বুঝাযায় অনেক পুরাতন। তবে উপস্থিত সকলের ধারণা সেটা বাজার থেকে কিনে এনে প্রধান শিক্ষককে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র এটা।
যৌন উত্তেজক সামগ্রী ব্যবহার করে এই স্কুলে ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার পরিবেশ আছে কিনা সে ব্যাপারেও সঠিক ব্যখ্যা দিতে পারেনি স্কুলের কোনো শিক্ষক-কর্মচারী। তবে পান খাওয়া ছাড়া কোনো নেশা বা ধুমপান করার কথাও বলতে পারেনি কেউ। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বারবার বলছিলেন প্রধান শিক্ষকের চাচাতো ভাই (অফিস সহকারী) হাবিবুল বাশার ও সকল শিক্ষকের সামনেই এই অপদ্রব্যগুলো পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বাশারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন প্রধান শিক্ষকের ভাইয়ের মাধ্যমে আমার কাছে তার কক্ষের চাবিটি আসে। ডিও অফিস থেকে তদন্তে আসলে তারা বসবেন বলে আমাকে চাবি আনতে বলা হয়। তারপর আমি রুমটি খুলি। তারা শিক্ষকদের রুমে বসলে আমি রুমটি আবার আটকে দেই। এরপর ৮ তারিখে ডিসি অফিস থেকে তদন্তে আসলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে চাবি আনতে বললে আমি এনে তার কাছে দিলে তিনি তালাটি পাল্টে দিয়ে আগের তালার চাবি আমার কাছে দিলে আমি আর নেই না। বিষয়টি আমি দেলোয়ার স্যারকে জানাই।
এরপর আমি একদিন ছুটি কাটাই। পরেরদিন স্কুলে আসলে সবার সামনেই অবৈধ জিনিসগুলো পাওয়া যায়। এর আগে রুম সংস্কারের জন্য প্রধান শিক্ষকের রুমের আসবাবপত্র স্যারদের রুমেই ছিলো। তারপর ভারি আসবাবপত্র আলমারি থেকে নামিয়ে আমরা সবাই আবার স্যারের রুমে নিয়ে যাই। তার এ বক্তব্যে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্তসহ কিছু শিক্ষক বাশারের উপর ক্ষিপ্ত হন।
এখন পাবনাবাসীর মনে প্রশ্ন প্রধান শিক্ষকের রুমে সকল শিক্ষক মিলে কোনও অপদ্রব্য পেলেননা। কিন্তু তার সাময়িক বরখাস্তের কারণে বিদ্যালয়ে না আসার সুযোগে কারা এই অপদ্রব্যগুলো রেখে তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করলো?
তালা বদলানোর বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিলুফার ইয়াসমিন খুব জোর দিয়ে বলেন আমরা এডিএম স্যারের কাছে বলেই তালা বদলিয়েছি। এডিএম এব্যারে কিছুই যানেননা বললে তিনি বলেন কোনসময় হয়তো স্যারকে পাওয়া যায়না সিএ’র সাথে কথা বলা হয়।
নিলুফার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে বলেন আমরা প্রতি বছরই ছাত্রীদের কাছ থেকে এ অভিযোগ পেয়েছি। তারই প্রেক্ষিতে আমি সকল টিচারকে জানাই। বিদ্যালয়ের কথা ভেবে আমরা নিজেরাই বসে ব্যপারটা মিটিয়ে ফেলেছি। আমরা সবাই মিলে স্যারকে বলেছি আপনার ক্লাস নেয়ার দরকার নেই। তিনি বলেছিলেন আমার চাইতে ভালো ক্লাস কেউ নিতে পারবেনা, আমি নিব।
তিনি কতখানি সত্য বলছেন যাচাই করার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কোচিংয়ে পড়াতেন কিনা জানতে চাইলে তিনি না বলেন। অথচ সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুদ্দিন লাইব্রেরী মোড়ে সঞ্জুর গলিতে মনোয়ার হোসেন টরিকের বাড়িতে তার মেয়ের নামে নাজ কোচিং সেন্টার করে ৮ বছর স্কুল ছাত্রীদের পড়াতেন যা আমিনুদ্দিনও অস্বীকার করেছেন। তার কোচিং সেন্টারটি ছাত্রীদের সাথে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য এলাকার লোকজন বন্ধ করে দেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তর তদন্ত করলে সত্যটা বেড়িয়ে আসবে।
শুধু তাই নয়, সাংবাদিক ঐ স্কুলে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য দুই দিন যান। শেষের দিনে যখন প্রধান শিক্ষকের রুমে অনুমতি নিতে ঢুকে তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, একজন সহকারী শিক্ষক ও দুইজন শিক্ষার্থীকে খুব অন্তরঙ্গ ভাবে হাসাহাসি করতে দেখা যায় যা সাংবাদিকের গোপন ক্যামেরায় বন্দী আছে। ওই দুই শিক্ষার্থীর ভবিশ্যৎ ভেবে তাদের নাম প্রকাশ ও চিত্র দেখানো হলোনা। শিক্ষার্থী দুজনের কাছে কোন বই বা খাতা ছিলোনা যে প্রাইভেট পড়ানোর অজুহাত দেবেন। এ বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে সত্যটা বেরিয়ে আসবে।
এমন একজন বিতর্কিত শিক্ষকের পক্ষে শিক্ষিকা নিলুফার কিভাবে বয়ান দেন ও এভাবে অকপটে মিথ্যা বলেন। তহলে তিনি শিক্ষার্থীদের কি শেখাবেন, কেনোইবা তার প্রতি এতো দরদ জনমনে এখন সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
২-৩ জন ছাত্রী রবিউল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তবে এ অভিযোগ যে মিথ্যা বানোয়াট সেটা তাদের কথা শুনলে বুঝা যায়। যে কয়জন অভিযোগ তুলছে তা তাদের সাথে হয়নি। তাদের বড় আপুর সাথে হয়েছে। তাও তারা দেখেনি, শুনেছে। কেউ আবার অভিযোগ করেছে তাদের শরীরে হাত দেয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষকের মুখে মদের গন্ধ পেতো কিনা প্রশ্নের জবাবে বেশি কথা ও হঠাৎ উত্তেজিত হওয়া মাথাগড়ম শিক্ষার্থীটি বলে স্যারের কাছ থেকে অনেক দুরে বসতাম তাই গন্ধ পেতামনা। এখানে আরেকটি প্রশ্ন থাকে, দুরে বসলে তিনি কিভাবে তাদের শরিরে হাত দিতেন! তারা এও দাবি করে প্রধান শিক্ষক একটি ছাত্রীকে কোলের উপর বসিয়ে খারাপ ভিডিও দেখিয়েছেন। সাংবাদিকরা ভর্তি ফরমে সেই ছাত্রীর ঠিকানা চাইলে প্রধান শিক্ষক সব নষ্ট করে ফেলেছেন বলে জানান ধর্ম শিক্ষক রুহল আমিন রিয়াজী। এবিষয়টিও তদন্তের দাবি জানান পাবনাবাসী।
বিদ্যালয়ের ভিতর শিক্ষার্থীরা যা বলছে তা হয়তো শিক্ষকদের (ষড়যন্ত্রকারী) চাপে পড়ে বলছে সন্দেহে, তাদের বাড়িতে বাবা- মায়েদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাদের বিকাল সাড়ে তিনটায় যেতে বলেন। আমরা গেলে কিছু শিক্ষার্থী ও তাদের মা বলেন আমার মেয়ের সাথে কিছু হয়নি। আমার বড় মেয়েও ওই স্কুলে পড়তো। তার সাথেও প্রধান শিক্ষক কোনোদিন কোনো খারাপ আচরন করেননি। আমি সবার সামনে তা বলবো। আরেক মা বলেন আমিনুদ্দিনের কোচিংয়ে আমার মেয়ে পড়তো। কিন্তু সে মেয়েটার সর্বনাশের সব রাস্তা খুলে ফেলেছিলো। আমি সময়মতো টের পেয়ে তার কোচিং থেকে বের করে অন্য কোচিংয়ে ভর্তি করি। আমিনুদ্দিন যাতে আমার মেয়ের কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য আমি সবসময় মেয়ের পিছুপিছু যেতাম। বিকাল চারটার সময় মাথা গড়ম মেয়টার বাসায় তার বাবার অনুমতি নিয়ে গেলে আশেপাশের সবাই বলেন তারা কেউ বাড়ি নাই। অগত্যা ফিরে আসতে হয়। ফেরার সময় বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও মাথাগরম ছাত্রীটি রাস্তায় একটি অটো রিক্সা থামিয়ে তার ভেতর থেকে গোপনে সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ করতে থাকে। বিষয়টি সাংবাদিকরা টের পেলে কেনো ভিডিও ধারণ করছে তাদের কাছে জানতে চাইলে মেয়েটি খুব উচ্চস্বরে সাংবাদিকদের হুমকি দিতে থাকে যে, কেনো তারা তার বাবার কাছে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে আবার গেলে তার চাইতে খারাপ কেউ হবেনা। সাংবাদিকরা হুমকির ভিডিও ধারণ করা শুরু করলে পেছন থেকে ঐ বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষক রুহুল আমিন রিয়াজী আরেকটি রিক্সায় বসে সেই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে সাংবাদিকদের নামে ইফটিজার অপবাদ রটায় এবং তা বিভিন্ন মাধ্যমে ছরিয়ে তাদের সম্মান ক্ষুন্ন করে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছরিয়ে গেছে। সাংবাদিকেরাও প্রশাসনের বিভিন্ন গ্রুপে তা পোষ্ট করেছে।
তার কিছুক্ষন আগে রুহুল সাংবাদিকদের ফোন করে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। ম্যানেজ না হলে হুমকি প্রদান করেন।
কেনো ভিডিও করছেন ও হুমকির বিষয়টি রুহুলকে জিজ্ঞেস করলে উল্টো অভিযোগ করে বলে আপনি আমাকে এভাবে রাস্তায় ঠেকাতে পারেন না। অথচ তাদের ঠেকানো হয়নি তারাই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দুই রিক্সা ভরে দলবলসহ তথ্য প্রমাণ সংগ্রহে বাধা প্রদান করে।
কেনো তারা ছাত্রীদের তাদের বাবা- মায়েদের সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে দেবেনা। কেনো ঐদিন দুপুর ১টায় পরীক্ষা শেষ হবার পরও মাথ গড়ম মেয়েটাকে শিক্ষকরা বিকাল চারটা তেরো মিনিটেও সাংবাদিকদের কাছ থেকে দুরে (বিদ্যালয়ে) রেখে দিলেন এবং তাকে সাথে নিয়ে রাস্তায় সাংবাদিকদের আক্রমণ করলেন এই প্রশ্নের রহস্য ধোঁয়াশা। কেনো বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের অনুসন্ধান করতে দেবেননা। পাবনা বাসি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর তদন্ত আশা করেছে।
গোপন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা যায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ অক্টোবর ডিসি অফিস থেকে বিদ্যালয়ে তদন্তে যায়। তার আগের রাতে (৯ অক্টোবর) মাথা গড়ম মেয়েটা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুদ্দিনের বাসায় ছিলো। তার মা তাকে গালি দিয়ে বলেছিলো তুই কাল সারারাত কোথায় ছিলি। এতে মাথা গড়ম মেয়েটার বাবর সায় আছে। তার উষ্কানিতে তার মেয়ে এতো বারাবারি করছে। তার অতীত ঘাটলে দেখাযায় সে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী ছিলো।
তবে প্রধান শিক্ষক বলেন ২০২৪ সালে তাপদাহসহ বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে সারা বছরে আমার মাত্র দুইটা ক্লাস হয়। সেই ক্লাস আমি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রুমে তাদের সামনেই নিতাম। বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম পাঁচটি। শিক্ষক-১৪ জন। পাঁচটি ক্লাসে পাঁচ জন শিক্ষক গেলেও বাকি শিক্ষকদের সামনেই ক্লাস নিয়েছি। আমি তাদের খাতায় সই করতাম। কিন্তু যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে তাদের আমি পড়াইনাই।
এদিকে সাময়ীক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমের বিরুদ্ধে ৭-১০-২০২৪ ইং প্রধান শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার ও স্থায়ী বহিস্কারের দাবী করে সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত স্কুল সভাপতি বরাবর অভিযোগ দায়ের, ৮-১০-২০২৪ ইং স্কুল সভাপতি বরাবর ৬ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরিত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের, ১২-৯-২০২৪ ইং ৩৯ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযেগ দায়ের। একই তারিখে (১২-৯-২৪ ইং) ১৮ জন শিক্ষক কর্মচারীর স্বাক্ষরিত স্কুলের সভাপতি বরাবর অভিযোগ দায়ের।
১২-৯-২০২৮ ইং (ভুল সাল) দেখিয়ে ১৫ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের। ১৮-৯-২৪ ইং জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ১৩ জন ৬ষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের, একই তারিখ ১৮-৯-২০২৪ ইং জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ১০ জন ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগপত্র দায়ের,
১৮-৯-২৪ ইং ৮ জন ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের, একই তারিখে ৬ জন ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের, একই তারিখে ১৭ জন ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের। এবং ২২-১০-২০২৪ ইং ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারীর স্বাক্ষরিত অভিযোগ ও বিবৃতি দেওয়া হয় বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগপত্রের সত্যতা যাচাই করেতে গিয়ে দেখা যায় ছাত্রীরা যে স্বাক্ষর করেছে তাতে একই ব্যক্তির স্বাক্ষরের মত। অভিভাবকদের অভিযোগপত্র দেখে একজন শিক্ষার্থী বলে এটা আমার মায়ের সই না। আবার মাথা গড়ম মেয়েটার বাবা বলেন আমার কাছে এসে বললো স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি হবে আপনার স্বাক্ষর লাগবে তাই দিয়েছি পড়ে দেখিনি।
জেলা শিক্ষা অফিসার রোস্তম আলী হেলালী’র সাথে দেখা করে এসব অভিযোগপত্রে ছাত্রীদের স্বাক্ষর সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। তবে অভিযোগ পত্রে যে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে তা দেখার দরকার রয়েছে।
এ ব্যপারে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত সঠিক এবং ন্যায় বিচার ভিত্তিক হওয়ার কথা জানান তিনি।
Leave a Reply