বিশেষ প্রতিবেদকঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে শহীদ ড. শামসুজ্জোহা দিবস ও শিক্ষক দিবস। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ জোহার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ।
সকাল ৯টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, শহীদ ড. শামসুজ্জোহার কন্যা সাবিনা জোহা খানকে। পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন হল, ইনস্টিটিউট, বিভাগ ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, যেখানেই অপশাসন, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন সেখানেই ড. জোহার নাম এসেছে। গত জুলাই আন্দোলনেও রংপুরের শহীদ আবু সাইদ জোহা স্যারকে স্মরণ করেছিলেন। অথচ দিবসটি এখনও জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। দিবসটি জাতীয় শিক্ষক দিবস উপলক্ষে স্বীকৃতি পেতে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবি জানানোর কথা বলেন তিনি।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী জোহা স্মারক বক্তৃতাসহ নানা আয়োজন রাখা হয়েছে। বাবার কবরে ফুল দিয়ে ড. জোহার কন্যা সাবিনা জোহা খান বলেন, ৫ যুগ পরেও শিক্ষার্থীরা তার বাবাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে ধারণ করে এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়া-পাওয়া নেই তার। সন্তান হিসেবে এটি তার জন্য গর্বের বিষয় বলেও মন্তব্য করেন।
এদিকে, সকালে বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করতে ড. জোহা নিজের বুক পেতে দিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। ড. জোহা যেদিন শহীদ হন, তার আগের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সভায় ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, ‘ছাত্রদের রক্তে আজ আমি উজ্জীবিত। আমি বলছি (শিক্ষার্থীদের মিছিলে) গুলিবর্ষণ হবে না। আর যদি গুলি করা হয় তবে কোন ছাত্রের গায়ে লাগার আগে তা আমার গায়ে লাগবে।’ তিনি শুধু ঘোষণাই দেননি, ছাত্রদের জন্য ঠিকই জীবন দিয়ে গেছেন। ছাত্রদের গায়ে পাকিস্তানি সেনাদের গুলি লাগতে দেননি, নিজেই বন্দুকের সামনে বুক পেতে দেন।
Leave a Reply