নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কথায় আছে টাকা দিলে বাঘের চোখ মেলানো যায় সেটা বৈধ বা অবৈধ যেমনই হোক। তেমনই দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়া পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস।দালালের হাতে কাগজপত্র সহ মোটা অঙ্কের টাকা দিলে সহজেই মেলে পাসপোর্ট। কিন্তু নিজে নিজে করতে গেলেই নানা হয়রানির শিকার হতে হয় পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ জনগনের। দিনের পর দিন ঘুরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে আশ্রয় নেন দালালের। পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বেড়েছে দালালদের আনাগোনা অফিসের সংশ্লিষ্ট একটি চক্রের মাধ্যমে সাধারণ জনগনের থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা এবং সেটার ভাগবাটোয়ারা হয় নিম্ন থেকে উর্ধতন কর্মকর্তা পর্যন্ত। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনার একটি দল আজ ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বিভিন্ন তথ্যাদি দেখে অনিয়মের প্রমান মিলেছে শুধু তাই নয় বিভিন্ন নাম্বার থেকে বিকাশের মাধ্যমে লেনদেনের প্রমান পেয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয় কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করা হয়, সেখানে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় বেশ কিছু কাগজপত্রে নির্দিষ্ট সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার হয়েছে। এবং অনেক কাগজ অসম্পূর্ণ থাকলেও ইতিমধ্যে আবেদনকারীরা পাসপোর্ট ডেলিভারি নিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে অনেক গ্রাহকের।
পাবনার চাটমোহর থানা থেকে আসা রবিউল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমি চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে যাব চারমাস আগে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি কিন্তু দিনের পর দিন ঘুরেও পাচ্ছিনা আবার এই অফিস থেকে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্যও দেয়না তারা তাহলে আমি একজন অসুস্থ মানুষ আমার কি করা উচিৎ জানিনা। পাবনা আতাইকুলার থেকে আসা আরিফ সর্দার বলেন আমার কাগজপত্র যা চেয়েছে সব দিয়েছি কিন্তু অজানা কারনে আমাকে ঘুরতে হচ্ছে, গতকাল সকালে এ বিষয়ে গেটে একজন আনসার এর সাথে বললে সে বললে সে বলে ভাই আমার পরিচিত একজন আছে তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা দিলে খুব দ্রুত ব্যবস্থা করে দিতে পারবে।
দুদক পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সুত্রধর বলেন, পাবনা পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য ও গ্রাহক হয়রানি নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সেই সংবাদের সূত্র ধরে আজকে পাবনা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় এনফোর্সমেন্ট টিম দালালদের যোগসাজশে কর্মকর্তাদের বিকাশে অর্থ লেনদেনের, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও দালালদের সঙ্গে বিশেষ সিলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করা তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। দালালদের সঙ্গে আনসার সদস্যরা ও কর্মকর্তারাও জরিত। বাইরের কম্পিউটারের দোকান থেকে ও দালালদের মাধ্যমে যেসব কাগজপত্র আসে সেগুলো দ্রুত করে দেওয়া হয়। এই অফিসে এতই অনিয়ম ও দুর্নীতি হয় যে একজন র্যাব কর্মকর্তাও পাসপোর্ট করাতে এসে হয়রানি করা হয়েছে। তিনি পাসপোর্ট করাতে পারেননি। সব অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। আমরা অভিযান শেষে হেড অফিসে একটি প্রতিবেদন পাঠাবো তারপর অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এদিকে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আহসান উদ্দিন বলেন, এখানে কোনো দালাল চক্র নেই। সবকিছু নিয়মতান্ত্রিক পরিচালনা হয়ে থাকে।
Leave a Reply