Warning: Creating default object from empty value in /home/timesofpabna/public_html/wp-content/themes/BreakingNews Design1/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php on line 29
বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার জমি বেদখল “সংকুচিত হয়ে পড়ছে গোচারণ ভূমি” বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার জমি বেদখল “সংকুচিত হয়ে পড়ছে গোচারণ ভূমি” – Times Of Pabna
  1. admin@timesofpabna.com : admin :
  2. ceo@timesofpabna.com : Pabna T : Pabna T
রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন

বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার জমি বেদখল “সংকুচিত হয়ে পড়ছে গোচারণ ভূমি”

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৫ বার পড়া হয়েছে

মোঃ শফিউল আযম, বেড়া :  সমবায়ী প্রতিষ্ঠান বাঘাবাড়ী মিল্কভিটার গোচারণ ভূমির (বাথান) বিপুল পরিমান জমি বেদখল হয়ে গেছে। মিল্কভিটার বাথান কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই জমি নিজেদের নামে জাল দলিল ও পত্তনির মাধ্যমে জোরপূর্বক ভোগদখল করছে। এতে সংকুচিত হয়ে পড়ছে উত্তরের বৃহত্তম গোচারন ভূমি।

বাঘাবাড়ী মিল্কভিটা সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এক অর্ডিনেন্স বলে পাবনা জেলার সাঁথিয়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর এবং সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাথান হিসেবে পরিচিত সমর্পিত খাস ও অর্পিত প্রায় এক হাজার ৮০০ একর জমি সরকারী দুগ্ধ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকারী সমবায়ী প্রতিষ্ঠান বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার নামে এককালীন লীজ প্রদান করেন। সেই থেকে দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতিগুলো মিল্কভিটা থেকে বাৎসরিক লীজ নিয়ে বাথানের জমি গোচারন ভূমি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। কিছু সমিতির স্থানীয় অসাধু ব্যক্তিরা তৎসময়ে মিল্কভিটা ও ভূমি অফিসে কর্মরত কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে জমির ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে জোরপূর্বক ভোগদখল করে আসছে। আবার অনেকেই বাথানের জমি গোচারন ভূমি হিসেবে লীজ নিয়ে ঘাস চাষ না করে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, স্বাধীনতার আগে চলনবিল অঞ্চলের সাঁথিয়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার একর জমি গোচারন ভূমি ছিল্। জাল দলিল ও ভূয়া পত্তনি নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গোচারন ভূমি জোড়পূর্বক নিজেদের দখলে নিয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলা ভুমি অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বাথান এলাকায় গোচারন ভূমির পরিমান কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০০ একর। এরমধ্যে ফরিদপুর উপজেলায় প্রায় ১০০ একর খাস, শাহজাদপুর উপজেলায় সমর্পিত খাস ৭১২ দশমিক ৬৮একর ও অর্পিত ৫৭৯ দশমিক ১৬ একর গোচারণ ভূমি রয়েছে। মিল্কভিটার ম্যানেজার সমিতি জানান, বর্তমানে মাত্র ৮৫০ একর জমি তাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। অবশিষ্ঠ ৫৫০ একর ( এক হাজার ৬৫০ বিঘা) জমি ভূয়া দলিল ও পত্তনির মাধ্যমে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বাথানের জমি দখল করে নিয়েছে। অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে সরকারি এই জমি উদ্ধারের জন্য সিরাজগঞ্জ আদালতে পৃথক ছয়টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে উত্তরের বৃহত্তম গোচারন ভূমি শাহজাদপুরের বাথান এলাকা ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। এই বাথান এলাকার বুড়িপোতাজিয়া কুঠিরভিটা, রাউতগাড়ি, রামকান্তপুর ও হান্নি মৌজায় বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রয়াস ও অর্থায়নে ১০০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে দেশের ৩৮তম পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় ‘রবীন্দ্র বিশ^বিদ্যালয় বাংলাদেশ’। সরকারী দুগ্ধ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকারী সমবায়ী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার পরিচালনা পরিষদের সাবেক পরিচালক নজরুল ইসলাম অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে গোচরণ ভূমি বাথানের জমি উদ্ধারের জন্য বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের কাছে জোড় দাবি জানিয়েছেন।

মিল্কভিটাভূক্ত কয়েকটি প্রাথমিক দুগ্ধ সমবায় সমিতির নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর এই বিস্তীর্ণ গোচারণ ভূমিকে (বাথান) কেন্দ্র করে পাবনা-সিরাজগঞ্জের দুগ্ধ অঞ্চলের বাঘাবাড়ীতে বড়াল নদী পাড়ে স্থাপন করা হয় সরকারী দুগ্ধ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকারী সমবায়ী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা। মিল্কভিটার বাঘাবাড়ী ‘ক’ ও ‘খ’ অঞ্চলে পাঁচ শতাধিক প্রাথমিক দুগ্ধ সমবায় সমিতি রয়েছে। সমিতিতে গো-খামারের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ২২ সহস্্রাধিক। পাবনার এবং সিরাজগঞ্জের বাথানের জমি মিল্কভিটার নিবন্ধিত দুগ্ধ সমবায় সমিতি গোচরণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বছরের ৯ মাস এই বাথানগুলোতে লক্ষাধিক গরু বিচরণ করে থাকে।

তারা অভিযোগ করেছেন, বাথান কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারকির অভাবে মিল্ক ভিটার শত শত একর জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। ভূয়া দলিল ও পত্তনির মাধ্যমে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে মিল্কভিটার জমি। এই অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে উত্তরের বৃহত্তম গোচারন ভুমি সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। আবার কিছু কিছু সমিতির কর্মকর্তারা জমি লীজ নিয়ে ঘাসের পরিবর্তে ধান আবাদ কওে থাকে। এতে বাথানে কাঁচা ঘাসের সঙ্কট দেখা দেয়। প্রাথমিক দুগ্ধ সমবায় সমিতির সদস্যরা বাথানের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি দখল মুক্ত এবং ধান আবাদ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

শাহজাদপুর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, কতিপয় দখলদার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে এসে জমির মালিকানা দাবি করে। তারা কোন দুগ্ধ সমিতিকে জমি লীজ না দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। ফলে বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর ভূয়া আর এস রেকর্ড করার অভিযোগে ওই সব দখলদারদের বিবাদী করে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও শাহজাদপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) বাদী হয়ে আদালতে পৃথক ৬টি মামলা দায়ের করেন। শাহজাদপুর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মিল্কভিটার পরিচালনা পরিষদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিচালক বলেছেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি জাল কাগজপত্র তৈরি করে অবৈধভাবে সমবায়ী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার প্রায় এক হাজার ৬৫০ বিঘা (৫৫০ একর) গোচারণ জমি জোড়পূর্বক ভোগদখল করে আসছে। মিল্কভিটার আওতাভূক্ত সমিতিগুলোর সদস্যরা ওই জমি গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে না।

এছাড়া তৎকালীন সময়ে মিল্কভিটায় দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ভূয়া কাগজপত্র তৈরি মাধ্যমে রেকর্ড করে গোচারণ ভুমি অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে। গোচরণ ভূমি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে ওই পরিচালক জানিয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Theme Designed By FriliX Group